প্রতিবছরের মতো ২০২৫ সালেও মুসলিম বিশ্ব ঈদুল আজহা উদযাপন করবে গভীর ধর্মীয় আবেগ ও সামাজিক গুরুত্ব নিয়ে। ইসলাম ধর্মের অন্যতম প্রধান এই উৎসবটি কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত। এটি মুসলিমদের জন্য ত্যাগ ও আনুগত্যের এক গভীর বার্তা বহন করে, যা হজের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত এবং হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আল্লাহর প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্যের স্মরণ করিয়ে দেয়।
ঈদুল আজহার সম্ভাব্য তারিখ ২০২৫
চাঁদের উপর ভিত্তি করে ইসলামিক তারিখ নির্ধারিত হয়, তাই ঈদুল আজহার নির্দিষ্ট দিন ভিন্ন হতে পারে। তবে সৌদি আরবসহ অনেক দেশে ২০২৫ সালের ৬ জুন ঈদুল আজহা উদযাপিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে একদিন পরে অর্থাৎ ৭ জুন ২০২৫ তারিখে ঈদ পালিত হতে পারে, যদি চাঁদের অবস্থান অনুযায়ী তেমনটা ঘটে।
ঈদের পেছনের ইতিহাস
ঈদুল আজহার মূল বার্তাটি আসে পবিত্র কোরআনের সেই ঘটনা থেকে, যেখানে হযরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর আদেশে তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি দিতে প্রস্তুত হন। আল্লাহ তাঁর এই পরীক্ষা ও আনুগত্যকে কবুল করেন এবং ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হিসেবে প্রেরণ করেন। এই ঘটনা থেকেই ইসলামে কোরবানির প্রচলন শুরু হয়।
ঈদের আচার ও রীতিনীতি
ঈদুল আজহার মূল আচার হলো কোরবানি করা, অর্থাৎ নির্দিষ্ট শর্ত অনুযায়ী পশু জবাই করা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। এছাড়া ঈদের দিন সকালে:
- ঈদের নামাজ আদায় করা হয়,
- পরস্পরকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হয়,
- গরিব ও অসহায়দের মাঝে কোরবানির গোশত বণ্টন করা হয়।
এই কোরবানির মধ্যে নিহিত রয়েছে সমতা, মানবিকতা ও সাম্যবাদের চেতনা।
সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে কোরবানির গুরুত্ব
২০২৫ সালে ঈদুল আজহা এমন এক সময়ে আসছে যখন বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা, যুদ্ধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। এই প্রেক্ষাপটে ঈদুল আজহার শিক্ষা—ত্যাগ, সহানুভূতি ও সামাজিক ন্যায়বোধ—আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও প্রাসঙ্গিক।
পরিবেশবান্ধব কোরবানির চর্চা
বর্তমানে অনেকেই পরিবেশ সচেতন কোরবানির প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন। পরিচ্ছন্নতা রক্ষা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পশুর প্রতি সদয় আচরণ এই উৎসবকে আরও সুন্দর ও মানবিক করে তোলে।
ঈদুল আজহা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি এক আত্মিক চর্চা—আত্মত্যাগের, বিশ্বাসের ও সহানুভূতির। ২০২৫ সালের ঈদুল আজহা হোক আমাদের সকলের জন্য শান্তি, একতা ও ভালোবাসার এক অনন্য বার্তা।
ঈদ মোবারক!
